রান্নাঘরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সবজি হলো পেঁয়াজ। কমবেশি প্রত্যেকের বাড়িতেই পেঁয়াজ নিজের জায়গা তৈরি করে নিয়েছে। যে কোনো খাবার রান্নার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই পেঁয়াজ। যদিও বাড়িতে যেদিন হয় নিরামিষ রান্না সেদিন রান্নায় মোটেই জায়গা পায়না গুরুত্বপূর্ণ এই সবজি। বাঙালিদের মধ্যে বরাবরই আমিষ, নিরামিষ নিয়ে রয়েছে নানান রকমের বিতর্ক। অনেকেই এই পেঁয়াজকে ঠেলে দিয়েছেন আমিষের কোটায়।
কষিয়ে মাংসর ঝোল রান্না হোক কিংবা মাছ। ডিম হোক অথবা সাধারন সবজি। যে কোনো রান্নাতে পেঁয়াজ না দিলে যেন মন ভরে না ভোজন রসিক বাঙালিদের। অনেকেই আবার কাঁচা পেঁয়াজ খেতে ভীষণ ভালোবাসেন। পুষ্টিবিদরাও বলছেন তীব্র এই গরমে কাঁচা পেঁয়াজ খেতে পারলেই নানান শারীরিক সমস্যার হাত থেকে পাওয়া যাবে মুক্তি। অথচ এই পেঁয়াজকে অনেকেই মনে করেন আমিষ। সত্যি কী তাই? পেঁয়াজ আমিষ নাকি নিরামিষ? এই বিতর্ক বছরের পর বছর ধরেই চলে আসছে।
অনেকেরই মতে, আমিষ শব্দের অর্থ হল প্রোটিন। আমিষ খাদ্যের কথা বললেই অনেকেরই মনে পড়ে প্রাণিজ প্রোটিনের কথা অন্যদিকে নিরামিষ খাদ্য বলতে প্রাণিজ প্রোটিন বাদ দিয়ে যে কোনো ধরনের খাবার। কিন্তু পেঁয়াজ তো আর প্রাণিজ খাদ্য নয়। অন্যান্য সবজির মতই মাটির তলায় উৎপাদন হয় এই সবজি। কিন্তু তারপরেও বাঙালিরা পেঁয়াজকে দিয়েছেন আমিষ তকমা। আসলে মাংস, মাছ, ডিম রান্নাতে ব্যবহার করা হয় এই পেঁয়াজ। সে কারণেই অনেকেরই মতে পেঁয়াজ হল আমিষ খাবার।
শুধুমাত্র কিন্তু পেঁয়াজ নয়, একইসঙ্গে রসুন, পুঁইশাক, মাসকলাই, গাজর, সয়াবিনের মতো খাবারগুলিকেও আমিষ তকমা দিয়েছেন বাঙালিরা। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না যে বৃন্দাবন, বেনারস এর মত ধর্মীয় স্থানে নিরামিষ আহার রান্না করার সময় ব্যবহার করা হয় পেঁয়াজ। ফলে বাঙালিরা একে আমিষ তকমা দিলেও অবাঙালিদের কাছে কিন্তু এটি নিরামিষ। আর সে কারণেই তো ধর্মীয় রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয় পেঁয়াজ।
তবে আমিষ হোক বা নিরামিষ, স্বাস্থ্যগুণে কিন্তু এর জুড়ি মেলা ভার। শরীর সুস্থ রাখতে ভীষণ উপকারী এই পেঁয়াজ। ক্যান্সারের মতো মারণ রোগকে দূরে রাখতে সাহায্য করে ছোট্ট এই জিনিসটি। পেঁয়াজে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার যা শরীরে ইমিউনিটি বাড়াতে ব্যাপক সাহায্য করে। এছাড়া প্রত্যেকদিন যাদের কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়ার অভ্যেস রয়েছে তাদের হাড় মজবুত থাকে। পেঁয়াজে রয়েছে ভিটামিন সি, যা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।