Jamai Sasthi 2024: কথাতেই আছে বাঙালির বারো মাসে ১৩ পার্বণ। আর এই ১৩ পার্বণের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্বণ হল জামাইষষ্ঠী। চলতি মাসের ১২ তারিখ জামাইষষ্ঠী। আদরের জামাইকে সেদিন আপ্যায়ন করে ভুঁড়ি ভোজ করাবেন শাশুড়ি মায়েরা। বলা ভালো, এই বিশেষ অনুষ্ঠানটি যেন জামাইদের পোয়াবারোর অনুষ্ঠান। নতুন জামাই হোক অথবা পুরনো, জামাইদের বসিয়ে আদর আপ্যায়ন করে তাদের মনের মতো খাবার খাওয়ান শাশুড়ি মায়েরা। জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে পালিত হয় জামাইষষ্ঠী।
তবে এই ষষ্ঠী যে কেবলমাত্র জামাই থাকলেই পালন করা যায় এমনটা কিন্তু নয়, জামাই না থাকলেও বিশেষ এই দিন পালন করা সম্ভব।আসলে বর্তমানে জামাইষষ্ঠীর প্রচারের ভিড়ে আসল ষষ্ঠী ব্রতের প্রচার রয়ে গিয়েছে আড়ালে।এই ষষ্ঠীর আসল নাম হল অরণ্যষষ্ঠী। শাশুড়ি হওয়ার আগেই সন্তান সন্ততির মঙ্গলের কথা চিন্তা করে একটা সময় বিশেষ এই দিন পালন করতেন মায়েরা। তবে বর্তমানে নিয়মের তুলনায় আনন্দ করাটাই মূল উদ্দেশ্য হয়ে উঠেছে আমজনতার।
জামাইষষ্ঠীর ইতিহাস-
প্রচলিত কাহিনী অনুযায়ী, এক পরিবারের থাকতেন দুই বউ। ছোট বউ খেতে ভীষণ ভালোবাসতেন তাই বাড়িতে ভালো মন্দ রান্না হলেই লুকিয়ে তিনি খেয়ে ফেলতেন সবটা। শাশুড়ি মা যখনই কিছু জিজ্ঞাসা করতেন তখনই তিনি বলতেন কালো বিড়াল এসে সব খেয়ে ফেলেছে। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, বিড়ালকে মা ষষ্ঠীর বাহন হিসেবেই মনে করা হয়। তাই নিজের সম্পর্কে মিথ্যে কথা শুনে বেড়াল ষষ্ঠী ঠাকরুনের কাছে অভিযোগ জানান। এর ফলে অত্যন্ত রেগে যান মা ষষ্ঠী। তাঁর অভিশাপে ছোট বউ এর একটি করে সন্তান জন্মায় এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যায়। এভাবে সাত পুত্র এবং এক কন্যা জন্মের পরে মৃত্যু হয় ছোট বউয়ের। যা কিছুতেই মেনে নিতে না পেরে বাড়ির বৌমাকে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করে দেন শাশুড়ি এবং শ্বশুরবাড়ির অন্যান্য লোকেরা। এরপর একটি জঙ্গলে গিয়ে সে কান্নাকাটি শুরু করলে তার কাছে বৃদ্ধা সেজে হাজির হন মা ষষ্ঠী। সমস্ত ঘটনা শুনে তাকে ক্ষমা করে দেন এবং বাড়িতে গিয়ে ভক্তি ভরে পুজো করতে বলেন। মা ষষ্ঠীর পুজো করার পরেই একে একে সাত পুত্র এবং এক কন্যার জীবন ফিরে পান তিনি। এভাবেই শুরু হয় অরণ্যষষ্ঠীর ব্রত।
জামাইষষ্ঠী পালনের রীতি-
শাস্ত্র অনুযায়ী এই পুজোয় কাঁঠাল পাতার ওপরে ৫, ৭ বা ৯ রকমের ফল কেটে সাজিয়ে রাখা হয়। সঙ্গে দেওয়া হয় ১০৮ টি আঁটি দূর্বা। ভোরবেলা স্নান পর্ব সেরে ফেলেন শাশুড়ি মায়েরা। এরপর ঘটের উপর রাখেন আমপাতা, সঙ্গে থাকে তালপাতার পাখা। একটি সুতো ভালো করে হলুদের রাঙিয়ে তাতে ফুল, বেলপাতা দিয়ে গিট বেঁধে ডোর তৈরি করা হয়। এরপর নিয়ম নিষ্ঠা ভরে মা ষষ্ঠীর পুজো করা হয়। তারপর চলে খানা পিনা।