একজন সরকারী কর্মী যে পরিমাণ আয় করেন তার সাথে তার সম্পত্তির পরিমাণ তুলনা করলে অনেক সময় অনেক রকম অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায়। এমন একজন সরকারি কর্মীকে নিয়ে সম্প্রতি মামলা হয়। আর এই মামলায় অভিযুক্ত সরকারি কর্মীর স্ত্রীর বিরুদ্ধেও অপরাধে যুক্ত থাকার দায় চেপেছে। মামলা চলাকালীন একাধিক প্রমাণের ভিত্তিতে সেই সরকারি কর্মীর স্ত্রীকেও মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়। যদিও আদালতের সেই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন জানিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মচারী স্ত্রী। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দেয় মাদ্রাস উচ্চ আদালত।
একজন প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিকের আয়ের সাথে তার সম্পত্তির পরিমাণের অসঙ্গতি লক্ষ্য করে সে পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলা চলাকালীন একাধিক প্রমাণের ভিত্তিতে দেখা যায় ওই পুলিশ আধিকারিকের আয়ের সাথে তার স্ত্রীও পরোক্ষভাবে জড়িত। আদালত চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করলে পুলিশ আধিকারিকের স্ত্রীকে এক বছরের কারাদন্ডে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।
আরোও পড়ুনঃ রেলে ৪২ হাজার শূন্যপদে কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ। মাসিক বেতন, আবেদন পদ্ধতি দেখে নিন
এই কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে মাজার হাইকোর্ট মাদুরাই বেচা আবেদন করেছিলেন দেবী নায়কি। তবে বিচারপতি কে কে রামকৃষ্ণ সেই আবেদন খারিজ করে দেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে পুলিশ আধিকারিক শক্তিভেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা শুরু উচ্চ আদালতে। সেই মামলায় অভিযুক্তদের তালিকায় ছিল পুলিশ আধিকারিকের স্ত্রী দেবী নায়কিও। তারপরে একাধিক প্রমাণের ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত হয় দেবী নায়কি। এর আগে মামলা চলাকালীন মৃত্যু হয় অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিক শক্তিভেলের। এই পরিস্থিতিতে এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের অভিযোগ দায়ের করলে সেখানেও স্বস্তি মেলে না আধিকারিক পত্নীর।
এই মামলার উপর ভিত্তি করে মাদ্রাস হাইকোর্ট বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ করে বলে, যদি সরকারি কর্মীদের স্ত্রীরাও দুর্নীতির সাথে যুক্ত হয়ে যায়, তাহলে দুর্নীতি কোথাও শেষ হবে না। হাইকোর্টের পক্ষ থেকে বলা হয়, সরকারি কর্মীদের স্ত্রীদের দায়িত্ব, স্বামী ঘুষ নিলে তা নিতে বারণ করা। কোন সরকারি কর্মী যদি ঘুষ নিয়ে কাজ করেন তবে সেক্ষেত্রে তিনি শুধু নিজের নয়, নিজের পরিবারেরও ক্ষতি ডেকে আনে। এক্ষেত্রে যিনি ঘুষ নিচ্ছে শুধু তিনি নয়, সেই ঘুষের টাকা যারা ফুর্তি করে থাকে তারা সকলেই দোষের ভাগীদার। তাই এক্ষেত্রে তাদেরও শাস্তি পেতে হবে।
আরোও পড়ুনঃ SBI, ICICI, HDFC কোন ব্যাঙ্কের RD-তে সুদের পরিমাণ সবথেকে বেশি? এখনই দেখে বেছে নিন আপনার জন্য সেরা ব্যাঙ্কটি
হাইকোর্টের বিচারপতি কে কে রামকৃষ্ণ আরো বলেন, ‘এই দেশে দুর্নীতি অকল্পনীয়ভাবে বিস্তৃত হয়ে পড়েছে। দুর্নীতি বাসা থেকে শুরু হয় এবং সরকারি কর্মীর স্ত্রী যদি দুর্নীতির পক্ষে থাকে, তাহলে এই দুর্নীতির কোনও শেষ নেই। ঘুষের অর্থের কারণে দেবি নায়কির জীবন আরামদায়ক হয়ে উঠেছিল। তাই তাঁকে এখন এর পরিণতি ভোগ করতে হবে – শাস্তি পেতে হবে।’