ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় সংস্থা হিসেবে টাটা গ্রুপের কথা আমরা সকলেই জানি। এই সংস্থার কর্ণধার হলেন শিল্পপতি রতন টাটা(Ratan Tata)। বিভিন্ন রকমের ব্যবসার সঙ্গে এই টাটা কোম্পানি যুক্ত রয়েছে। গাড়ি, রিটেল, তথ্য প্রযুক্তি, ধাতু, হোটেল ইত্যাদি সহ আরো অনেক ক্ষেত্রে টাটা সংস্থা যুক্ত আছে। যার ফলে এই সংস্থার আর্থিক সম্পত্তির পরিমাণ যে আকাশছোঁয়া এই বিষয়ে সকলেই জানেন।
প্রত্যেক বছর কয়েক লক্ষ কোটি টাকা উপার্জন হয় এই সংস্থার। কিন্তু তবুও আপনারা জানলে অবাক হবেন ভারতীয় ধনুকুবেরদের তালিকায় রতন টাটার নাম নেই। কিন্তু এত সম্পত্তির মালিক হওয়া সত্ত্বেও কেন রতন টাটার নাম নেই?
আরো পড়ুন: এই প্রকল্পে মাসে মাসে ১৫০০ টাকা দিচ্ছে রাজ্য সরকার, বাড়ি বাড়ি গিয়ে নক করছেন আধিকারিকেরা!
১৯৯০ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সমস্ত টাটা গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব সামলেছিলেন টাটা সনসের প্রাক্তন চেয়ারম্যান রতন নোভেল টাটা। বর্তমানে তিনি টাটা গ্রুপের দাতব্য ট্রাস্টের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত আছেন। ৮৬ বছর বয়সে এসেও দক্ষভাবে এই ব্যবসা সামলাচ্ছেন। নানা রকমের জনহিতকর কাজকর্মের জন্য এবং শিল্পপতি হিসেবে তিনি খুব জনপ্রিয়।
২০০৮ সালে তাকে পদ্মবিভূষণ সম্মানে পুরস্কৃত করা হয়েছে। তবুও ধনকুবেরদের তালিকায় তার নাম নেই। রতন টাটা শুধু ব্যবসায়ীভাবে যে জনপ্রিয় তা নয়, বিনিয়োগকারী হিসাবেও তার জনপ্রিয়তা প্রচুর। বেশ কিছু স্টার্টআপ কোম্পানিতে তিনি অর্থ বিনিয়োগ করেছেন। কিছু কিছু সংস্থায় তিনি নিজেই বিনিয়োগ করেছেন আবার কিছু সংস্থার বিনিয়োগ করিয়েছেন তার বিনিয়োগকারী সংস্থাগুলোর মাধ্যমে।
আরো পড়ুন: GST: এবার বাঁচবে কিছু পয়সা! LPG-র দাম কমানোর পর GST নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের
তবে এত কিছুর পরেও ধনকুবেরদের তালিকায় তার নাম না থাকার একটি বিশেষ কারণ রয়েছে। ২০২২ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী ভারতীয় ধনকুবেরদের তালিকায় ৪২১ নম্বরে নাম ছিল রতন টাটার। ২০২২-এ তার সম্পত্তির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৩৮০০ কোটি টাকা। ওইদিকে আম্বানি কিংবা আদানিদের সম্পত্তির পরিমাণ কয়েক লক্ষ কোটি টাকা।
ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে রতন টাটা যা আয় করেন, তা কিন্তু কম না। কিন্তু এত পরিমান অর্থ উপার্জন করার পরেও সম্পত্তির তালিকায় তিনি প্রথম সারিতে জায়গা করতে পারেননি। আসলে টাটা গ্রুপের পক্ষ থেকে একটি ট্রাস্টি বোর্ড চালানো হয়। এই ট্রাস্টি স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, জীবিকা ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে অর্থ বরাদ্দ করে থাকে। টাটা সন্সের প্রাপ্ত লাভের ৬৬ শতাংশ ধার্য করা রয়েছে এই ট্রাস্ট-এর নামে।
এছাড়া টাটা গ্রুপের বেশিরভাগ শেয়ারই অন্যান্যদের হাতে রয়েছে। নিজের হাতে খুব সামান্য অংশই রেখেছেন টাটা গ্রুপ। সেই কারণেই আর্থিক দিক থেকে আম্বানি, আদানিদের সমকক্ষ হয়ে উঠতে পারেনি টাটা গ্রুপ। ভারতের ধনকুবেরদের তালিকায় প্রথম দিকে নাম না থাকলেও মানুষের মনে টাটা গ্রুপের এক আলাদাই অবদান রয়ে গিয়েছে।